খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ পৌষ, ১৪৩১ | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ

খুলনায় অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগের সম্ভবানাকে কাজে লাগাতে পলিসি ডায়লগ অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনায় অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগের সম্ভবানাকে কাজে লাগাতে পলিসি ডায়লগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এ পলিসি ডায়লগের আয়োজন করা হয়। দেশের আর্থ সামাজিক সমৃদ্ধি ও শিক্ষা বিনিয়োগে সচেতন ও কৌশলগত দিক নির্দেশনা প্রদানকারী উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের আয়োজনে জুলাই ৩৬ ফোরাম এবং বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সহযোগিতায় এ ডায়লগ আয়োজন করে।

শেখ আশরাফ-উজ-জামান এর সভাপতিত্বে এ্যাড. কুদরত ই খুদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের সিইও এবং জুলাই ৩৬ ফোরাম এর আহবায়ক নাজির শাহীন।

তিনি বলেন দক্ষিণ ডেল্টার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগের সম্ভবানাকে কাজে লাগানো এবং ইকো সিস্টেম কমপ্লায়েন্সে রোড ম্যাপিং ডেভেলপমেন্ট প্যাটার্ন বিশ্ব ব্যাপি জলবায়ু পরিবর্তনে গেম মেকার হিসেবে সুন্দরবন রক্ষা করার অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

ডায়লগে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এ্যাড. শফিকুল আলম মনা। আলোচনায় অংশগ্রহন করে বিষয় ভিত্তিক প্রস্তাবনা পেশ করেন প্রকৌশলী নাওয়িদ হাসান, অন্যান্য বক্তারা হলেন খুলনা বিভাগের বিডা পরিচালক প্রণব কুমার রায়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ হারুণ চৌধুরী, প্রফেসর ড. নাসিফ আহসান, প্রফেসর কামরুল আহসান, কুয়েটের ড. তুষার কান্তি রায়, কেডিএর চীফ ইঞ্জিনিয়ার সাবিরুল আলম, কেসিসির প্লানিং অফিসার আবিরুল জব্বার, সুব্রত ঘোষ সুমন, মারুফ হাসান, এস,এম শহীদুজ্জামান লিমন, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু হাসান, সাংবাদিক এতেশামুল হক, এইচ এম আলাউদ্দিন, মোঃ মনিরুজ্জামান রহিম, সিলভি হারুন, মোঃ নিজামউর রহমান লালু, মিজানুর রহমান বাবু, এ্যাড. শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, মিনা আজিজুর রহমান, সৈয়দ এনামুল হাসান ডায়মন্ড, ইঞ্জিঃ রফিকুল আলম সরদার ও মোঃ মনিরুল ইসলাম মাস্টার প্রমুখ।

আলোচনায় বক্তারা বলেন খুলনা বিভাগের ভৌগলিক অবস্থান, জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ শিল্প-সংস্কৃতির চারনভূমি, শুধু বাংলাদেশেরই নয় বরং সারা বিশ্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। রেল, সড়ক ও নৌ যোগাযোগ এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত দিক থেকেও খুলনা বিভাগ দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে সবচেয়ে অগ্রগামী । অথচ নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা, আত্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তি সম্পাদনে অযোগ্যতা ও দেশের স্বার্থরক্ষায় কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহনের ব্যর্থতার কারনে, খুলনা বিভাগ তার কাংখিত উন্নয়ন ও বিনিয়োগ আর্কষণে ব্যর্থ। এ বিষয়ে পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের আলোচনার বাস্তবতা পরিবর্তীত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন, উক্ত অনুষ্ঠানে খুলনা অঞ্চলের সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা সমূহ ও শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশ গ্রহনে আয়োজিত এই পলিসি ডায়লগ ।

০১। সড়ক, নৌ ও রেল পথসহ অন্যন্য অবকাঠামোগত সুবিধা দিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রসর অঞ্চল যেখানে দেশের ২য় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মংলা বন্দর অবস্থিত । যেখানে মংলা বন্দর থেকে খুবই কাছে ২০-৩৫ মিটার প্রাকৃতিক নাব্যতা সম্পূর্ন শিপশাহ পয়েন্টে, বিদেশী বিনিয়োগে একটি গভীর সমদ্র বন্দর নির্মান, শুধু মাত্র খুলনা অঞ্চল তথা বাংলাদেশকে নয়, সমগ্র সার্ক অঞ্চলের বানিজ্যে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারে। অতএব যথাশীঘ্র সম্ভব দেশীয়-আন্তর্জাতিক সমীক্ষা করে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হোক ।

০২। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বানিজ্যিক বাস্তবতা নিরিখে সারা বিশ্বে হাজার হাজার বৃহৎ রপ্তানির শিল্প কারখানা স্থানান্তরের কাজ চলছে। সানসেট , মাইগ্রেটরি ও টেকভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে বিনিয়োগ বান্ধব ও সময়পযোগী বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের এই দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল খুলনায়, বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার মাধ্যমে ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠা করে অনতিবিলম্বে আগামী ০৫ বছরের মধ্যে খুলনা অঞ্চলে অন্তত ০২ মিলিয়ন মানুষের কর্ম সংস্থান সৃষ্টি করা হোক।

০৩। সুন্দরবন ধংসের কারন হিসেবে চিহ্নিত রামপালের বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বনের অনেক কাছ থেকে যাওয়া রেলপথ ও তেলবাহী জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রন করতে হবে এবং অন্যান্য বিষয়গুলো পুনঃবিবেচনা করতে হবে। সংবিধানের ১৮ এর ক ধারা মতে, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র রক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আবশ্যিক দায়িত্ব, যা পালনে তারা বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। সারা বছর নতুন বনায়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে ও সুন্দরবন রক্ষা করতে হবে।

০৪। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও বরগুনা এই ০৪ টি জেলার সুন্দরবন অঞ্চল নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইকো ট্যুরিজম এলাকা নির্মাণ করতে হবে। যা বাস্তবায়ন করে এই এলাকায় বিদেশী পর্যটককে আকৃষ্ট করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। এ লক্ষে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সুবিধা ও সহযোগীতা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

০৫ । এছাড়াও বৃহত্তর খুলনার সমৃদ্ধ ও এঁতিহ্যবাহি শিল্প কারখানাগুলোতে আধুনীকিকরণ এবং পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে এ অঞ্চলকে আন্তর্জার্তিক শিল্প নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!